নিউজনাউ ডেস্ক: 'সেঞ্চুরি' সব খেলোয়াড়দের জন্য বহুল প্রত্যাশিত এক ইনিংস। সব খেলোয়াড়েরই স্বপ্ন থাকে, চায় একটি ম্যাচে হলেও সেঞ্চুরি করার। কিন্তু সেই সেঞ্চুরি করার দাঁড়প্রান্তে গিয়েও যদি ফিরে আসতে হয় তাহলে সেই কষ্ট কাটিয়ে ওঠা অনেক কষ্টের । যেমনটা হয়েছে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়ের ।
ওয়ানডের অভিষেক হয়েই প্রথম ম্যাচে প্রায় সেঞ্চুরির দিকে পৌঁছে গিয়েছিলেন তৌহিদ হৃদয়। শুধু আর ৮টি রান যোগ করলে হয়তো বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে অভিষিক্ত কোনো খেলোয়াড়ের সেঞ্চুরি হয়ে যেতো। যা আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে কোনো খেলোয়াড়ের নেই। কিন্তু কে জানতো আইরিশ পেসার গ্রাহাম হিউম তার পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে। ৯২ রানে আউট করে হৃদয়ের হৃদয় ভেঙে দিলেন এই পেসার।
আজ সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জীবনের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে দারুণ এক ইনিংস খেলে হিউমের বলে বোল্ড হয়ে গেছেন হৃদয়। ৮৫ বলের ইনিংসে ৮টি চার মেরেছেন, ২টি ছয়ও। তবে এটা তো অনুমান করা মোটেই কঠিন কিছু নয় যে, ৯২ রান করার তৃপ্তির চেয়ে ৮ রান করতে না পারার হতাশাই বেশি আক্রান্ত করেছে হৃদয়কে। সেঞ্চুরি করতে পারলে ওয়ানডে অভিষেকেই সেঞ্চুরির ১৭তম কীর্তি গড়তেন।
তা করতে না পেরে এর চেয়েও ছোট্ট একটা তালিকায় উঠে গেছে তাঁর নাম। ওয়ানডে অভিষেকে নার্ভাস নাইনটিজে আউট হওয়া ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হৃদয়। সেই তালিকার ষষ্ঠ নাম্বার পজিশনে অবস্থান করছেন এই ব্যাটার । এর আগে ১৯৯৪ সালে নেপিয়ারে নিউজিল্যান্ডের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান স্টিভেন ফ্লেমিং ভারতের সাথে অভিষিক্ত ম্যাচে ৯০ করে আউট হয়েছিলেন। তবে কাকতালীয়ভাবে, সর্বশেষ এই ঘটনাও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০২২ সালের ৮ জানুয়ারি কিংস্টনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামার ব্রুকস আউট হয়েছিলেন ৯৩ রানে।
সেঞ্চুরি করতে পারলে তা হতো বাংলাদেশের প্রথম। তা না পারলেও একটা জায়গায় এখন বাংলাদেশের এক নম্বর তৌহিদ হৃদয়। ওয়ানডে অভিষেকে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ইনিংসটি এখন তাঁর। আগের সর্বোচ্চ ছিল ৬৩।
নাসির হোসেন যা করেছিলেন ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে। ওয়ানডে অভিষেকে বাংলাদেশের আর একজন ব্যাটসম্যানেরই হাফ সেঞ্চুরি আছে। ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই যা করেছিলেন ফরহাদ রেজা।
নাসির হোসেন যা করেছিলেন ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে। ওয়ানডে অভিষেকে বাংলাদেশের আর একজন ব্যাটসম্যানেরই হাফ সেঞ্চুরি আছে। ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই যা করেছিলেন ফরহাদ রেজা।বিপিএল থেকেই দুর্দান্ত ছন্দে আছেন হৃদয়। সেখানে ১৩ ম্যাচে ১২ ইনিংস খেলে করেছিলেন ৪০৩ রান। বিপিএলের তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রাহক ছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
বিপিএলের সেই পারফরম্যান্সই হৃদয়ের জন্য জাতীয় দলের দরজা খুলে দেয়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দুই স্কোয়াডেই ডাক পেয়েছিলেন। ওয়ানডেতে খেলার সুযোগ না পেলেও খেলেছেন ৩টি টি-টোয়েন্টিই। টি-টোয়েন্টি অভিষেকে খুব বেশি রান না করলেও ১৭ বলে ২৪ রানের ইনিংসটিতে ছিল আত্মবিশ্বাসের ছোঁয়া।
ওয়ানডে অভিষেককে বলা যেতে পারে সেটিরই পুরস্কার। সেঞ্চুরি না পাওয়ার দুঃখ চিরদিনই থাকবে, তবে সুযোগটাকে যে ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন তৌহিদ হৃদয়—তা না বললেও চলে।
নিউজনাউ/এসবি/আরএইচআর/২০২৩