চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ ঠিক যতটা গর্জে ততটা বর্ষে না! অনেক সময় এই প্রবাদের ব্যবহার হতে আমরা দেখি। চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ যে মাত্রায় ছড়িয়েছিল বিপরীতে তেমন কিছুই হয়নি! তবে কথার বরখেলাপ করেছে দু'দলই।
সমাবেশের আগে আওয়ামী লীগ বলেছিলো বিএনপি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করলে বাধা দিবে না তারা। অন্যদিকে বিএনপির নেতারা ঘোষণা দিয়েছিলো লাঠি হাতে তাদের নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসবে না। অথচ সমাবেশের দিন দেখা গেল ভিন্ন চিত্র।
বুধবার (১২ অক্টোবর) পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিভাগীয় সমাবেশে বিএনপি নেতাকর্মীরা এসেছেন দলবেধে লাঠি হাতেই। কৌশলে ব্যানারের আড়ালে বাশ নিয়েও সমাবেশে প্রবেশ করতে দেখা গেছে অনেক নেতাকর্মীদের।
আবার পথে পথে বিএনপি নেতাকর্মীদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়া, গাড়ির চাকা পাংচার করে দিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। অনেক জায়গায় গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের হামলায় অন্তত ২০ জন বিএনপি নেতাকর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷
সোমবার বিকেলে আওয়ামী লীগের চট্টগ্রামের ৩ ইউনিটের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন, নৈরাজ্য না করলে বিএনপির এই মহাসমাবেশে কোন ধরনের ঝামেলা করা হবে না।
জানা যায়, বুধবার (১২ অক্টোবর) ভোর থেকে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন প্রমুখমুখে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ছাত্রলীগ যুবলীগের নেতা-কর্মীদের মহড়া দিতে থাকে। এসময় ফৌজদারহাট এলাকায় সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা সমবেশমুখী গাড়ি থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। এছাড়াও খাগড়াছড়ি থেকে আসা নেতাকর্মীদের তবলছড়িতে হামলা করা হয়। এতে কমপক্ষে ৫ জন গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মিরসরাইয়েও হামলা করা হয়েছে নিজামপুর কলেজের সামনে। অন্যদিকে বারৈয়ারহাট এলাকায় তাদের গাড়ি ছাড়তে বাধা দেয়া হয়েছে। নগরের আমবাগান রেলক্রসিং এলাকায় একটি গাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়েছে।
অন্যদিকে সমাবেশে সমাবেশের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানিয়েছিলেন তাদের কোন কর্মী লাঠিসোটা নিয়ে সমাবেশে আসবে না। কিন্তু সমাবেশের প্রতিটি মিছিলেই বিএনপির নেতাকর্মীদের লাঠি হাতে আক্রমনাত্মক শ্লোগান দিতে দেখা গেছে।
যদিও হামলার অভিযোগ যা বিএনপি করছে তা সঠিক নয় দাবি করে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, 'কোথাও কোন হামলা হয়নি। আমাদের কোন কর্মসূচিও ছিলোনা। তারা দাবি করছে তাদের সমাবেশকে কেন্দ্র করে একটা সাজ সাজ রব পড়বে। সেটা আসলে হয়নি। মাঠ খালি ছিলো। তাই তারা এসব বলে একটা অজুহাত তৈরির চেষ্টা করছে।'
এদিকে লাটিহাতে সমাবেশে আসা বিএনপি নেতাকর্মীদের অতিউৎসাহের কারণে তাদের সাথে কথা বলা যায়নি। তারা বাঁশা লাঠি উঁচিয়ে স্লোগানে ব্যস্ত ছিল।
নিউজনাউ/পিপিএন/২০২২