চট্টগ্রাম ব্যুরো: সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে টেকনাফে ফেরার পথে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে মামলার বাদী হওয়ার জন্য আবারও ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম বেঁধে দেয় আন্দোনলরত শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১৯ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক জিরো পয়েন্টের রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।
হামলার স্বীকার মেহেদী হাসান নওশেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের উপর হামলা করা হয়েছে। এতদিন হয়ে যাওয়ার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় কোন পদক্ষেপ নেয়নি। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যর্থতা। জড়িতদের শাস্তির বিধানে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যথোপযুক্ত পদক্ষেপ দেখতে চাই।
মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সুমাইয়া রেজা, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের পাঁচ দফা দাবির বাস্তবায়ন হচ্ছে না আমরা আমাদের কর্মসূচি থেকে ফিরে আসবো না। আমাদের আন্দোলন চলবে।
হামলার পরে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ফজলে রাব্বী বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তবে মামলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান শিক্ষার্থীরা।
এই বিষয়ে চবি প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম সিকদার বলেন, এই ঘটনায় আমরা নিজেরাই মর্মাহত। শিক্ষার্থীদের সব দাবি আমরা আমলে নিয়েছি এবং তা খুব দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। জড়িতদের দ্রুত বিচারের বিষয়ে চবি প্রশাসন যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নিবে।
কর্মসূচি থেকে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিসমূহ হল:
১. এই ঘটনার সাথে জড়িত জাহাজের স্টাফ সন্ত্রাস বাহিনীকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।
২. বে-ক্রুজ ইন্টারন্যাশনাল জাহাজের লাইসেন্স আজীবনের জন্য বাতিল করতে হবে।
৩. বে-ক্রুজ ইন্টারন্যাশনাল জাহাজ কর্তৃপক্ষের মিথ্যা ও বানোয়াট স্টেটমেন্ট প্রত্যাহার পূর্বক লিখিত মুসলেকা দিয়া নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
৪. জাহাজ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জান-মালের যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তার যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
৫.দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাফিলতির জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
জড়িতদের শাস্তি দাবিতে এর আগে ১৫ মার্চ চবি ক্যাম্পাসে ও ১৬ মার্চ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা।
১৪ মার্চসেন্টমার্টিন থেকে অর্থনীতি বিভাগে স্নাতকোত্তর ব্যাচ ট্যুর শেষে বে-ক্রুজ জাহাজে করে টেকনাফ ফিরছিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি, টেকনাফ থেকে ফেরার সময় আসনে বসাকে কেন্দ্র করে ঝামেলা সৃষ্টি করে বে ক্রুজ-১ জাহাজের স্টাফরা। প্রথমে তর্কতর্কির এক পর্যায়ে দুই শিক্ষকসহ ১০ জন শিক্ষার্থীর ওপর লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ করে জাহাজের স্টাফরা। পরে দমদমিয়া ঘাটে পৌঁছানোর পর আবারো হামলা চালানো হয়। এতে ২জন শিক্ষক ও ১জন ছাত্রীসহ প্রায় ২০ এর অধিক আহত হয়। যার মধ্যে ১০ জন গুরুতর আহত হয়।